Title | : | অপেক্ষা |
---|---|---|
Author | : | হুমায়ুন আহমেদ |
Publisher | : | আফসার ব্রাদার্স |
Cover | : | HardCover |
Discount | : | 30% |
ISBN | : | 9847016600173 |
Edition | : | 32th Edition, July 2023 |
Page No | : | 220 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
অপেক্ষা
Original price was: ৳ 400.00.৳ 280.00Current price is: ৳ 280.00.
বই থেকেঃ মানুষের জীবন কি চক্রের মত? চক্রের কোন শুরু নেই, শেষ নেই। মানব জীবনও কি তাই? রহস্যময় চক্রের ভেতর এই জীবন ঘুরপাক খেতে থাকে? শুরু নেই, শেষ নেই। চক্র ঘুরছে।
এই চক্রের ভেতরে ঘুরপাক খেতে খেতে অপেক্ষা করে কেউ কেউ কিংবা সকলেই। কিসের অপেক্ষা?
– হুমায়ূন আহমেদ’এর অপেক্ষা হাতে নিলে এই কথাগুলোই হয়তো সর্বপ্রথম চোখে পড়বে, মলাটের ভেতর সরু অক্ষরে লেখা। সাধারণত এখানে বইয়ের ছোট্ট একটা পরিচিতি লেখা থাকে। ভেতরে কি পেতে যাচ্ছেন, কি পড়তে যাচ্ছেন তার আকার ইঙ্গিত। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ এখানে তেমন কিছু লিখতে চাইলেন না। রহস্যে ঘিরে রাখলেন পাঠককে। মনে প্রশ্ন জাগিয়ে দিলেন। কয়টা পৃষ্ঠা উল্টে সামনে এগোলেই চার লাইনের ছোট্ট কবিতাংশ,
ঘর খুলিয়া বাইর হইয়া
জোছনা ধরতে যাই
আমার হাত ভর্তি চাঁদের আলো
ধরতে গেলেই নাই।
লাইনগুলো দিয়ে রহস্য ধরে রাখলেন কিংবদন্তি লেখক। এখন তো সামনে এগোতেই হবে।
বইটি শুরু হয় আনন্দ দিয়ে। অমলিন আনন্দ, যেখানে কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু জীবন তো এমন নয়। জীবনে সুখ-দুঃখ উভয় যমজ ভাইয়ের মত বিরাজমান। হুমায়ূন আহমেদ’এর অপেক্ষা কারণে অকারণে সত্য কথা বলে। মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দেয়, আবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে নিজের ভুলগুলো দেখিয়ে দেয়। কষ্টের সীমা লঙ্ঘন করে সুখের হাতছানি দেয়। কিন্তু সুখ দেয় না।
এই অপেক্ষাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আরও অসংখ্য পঁচিশ বছর যেন এভাবেই কেটে যায়।
23 in stock
2 reviews for অপেক্ষা
You must be logged in to post a review.
demoaccount –
আমার পড়া সেরা একটা বই।
moriomaktermitu71 –
বইয়ের লাইন
প্রকৃতি যাকে দেবার তাকে উজাড় করেই দেয়, যাকে দেবার না তাকে কিছুই দেয় না।
বই: অপেক্ষা
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
” মানুষের জীবন কি চক্রের মত? চক্রের কোন শুরু নেই, শেষ নেই। মানব জীবনও কী তাই? রহস্যময় চক্রের ভেতর এই জীবন ঘুরপাক খেতে থাকে? শুরু নেই, শেষ নেই। চক্র ঘুরছে।এই চক্রের ভেতরে ঘুরপাক খেতে খেতে অপেক্ষা করে কেউ কেউ। কিংবা সকলেই ।
• সুপ্রভার আ’ত্মহ’ত্যা
উপন্যাসের শুরুতেই সুরাইয়ার অপেক্ষা শুরু হয় তাঁর স্বামীর জন্যে। অথচ সে অপেক্ষা আর ফুরোয় না। একসময় জন্ম নেয় সুপ্রভা। ভাই ইমন গম্ভীরতা নিয়ে বড় হতে থাকে, ছোট্ট সুপ্রভা চঞ্চলতা নিয়ে। উপন্যাসে তার বয়স উল্লেখ করা হয় তেরো। নিতান্তই এক কিশোরী। তার চঞ্চলতার জন্যেই সে পাঠক মনে বেশ জায়গা করে নিয়েছে বটে। কিন্তু তার আ’ত্মহ’ত্যার ফলে লেখকের প্রতি ক্ষো’ভ সৃষ্টি হয় পাঠকদের। কারো কারো মতে লেখক তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য এমন কাজ করেছেন।
টিনএজ বা কিশোরী বয়সটা এমন এক সময় যে এই বয়সীদের মনস্তত্ত্ব বোঝা খানিকটা মুশকিল। কখনো তারা ভীষণ হাসি-খুশি, চঞ্চল কিংবা মন খা’রাপের রঙ মেখে বিবর্ণ হয়ে ওঠে। আদতে মানুষ তার এই বয়সটাতেই বেশিরভাগ ভুল কাজ, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। যা তাকে পরবর্তীতে অনুশোচনায় দগ্ধ করে। সেই সুযোগটা অবশ্য সকলে পায় না। যেমন সুপ্রভা! ব্যাপারটা যে মন গড়া, তা নয় কিন্তু। সুপ্রভার মতো এমন অনেককেই আমি আ’ত্মহ’ত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিতে দেখেছি বিধায় ঘটনাটা আমার কাছে অস্বাভাবিক ঠেকেনি। পাঠক আবার ভাববেন না যে, আমি আ’ত্মহ’ত্যাকে সমর্থন করছি।
লেখক ঘটনাটি দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন?
আমি বলব, এ দ্বারা লেখক তুলে ধরতে চেয়েছেন কিশোর-কিশোরিদের অদ্ভুত এই মনস্তত্ত্ব, মানসিক টানাপোড়েন। তার সাথে এও বোঝাতে চেয়েছেন, এই বয়সের নাজুকতা। মা-বাবার সামান্য মন্তব্যেই সন্তানকে ভ’য়’ঙ্কর সব সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। আদতে পরীক্ষায় ভালঝ নম্বর পাওয়াটাই বেশি জরুরি নাকি সন্তানের জীবন? প্যারেন্টিং -এর ক্ষেত্রে বাঙালি মা-বাবার আরো স্মার্ট হওয়া চাই।
লেখক চাইলেই সুপ্রভাকে ফেরত নিয়ে আসতে পারতেন; বাঁচিয়ে রাখতে পারতেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো মানুষের পক্ষে তো তা সম্ভব নয়। উদাহরণ হয়ে রইল নাহয় সুপ্রভা!
• সুরাইয়ার অ’স্বাভাবিকতা
সুরাইয়া চরিত্রটি বর্তমান সময়ের নারীদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তা বলা বাহুল্য। একটা সময় নারীদের শেখানো হতো কিংবা তাদের লক্ষ্য-ই ছিল স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘর-সংসার করা। সবার না হলেও বেশিরভাগ। সেক্ষেত্রে সুরাইয়া অনেকটাই স্বামীনির্ভর হওয়ায় তাঁর এই পা’গ’লামি অস্বাভাবিক কিছু নয়। বরঞ্চ অস্বাভাবিকতার সাপেক্ষে স্বাভাবিক।
তাছাড়া লেখক খুব সূক্ষ্মভাবে সুরাইয়া মানসিক অবস্থা প্রকাশ করেছেন। তা হলো ‘পোস্টপার্টাম ডি’প্রেশন’।
সুপ্রভার জন্মের পরপরই সুরাইয়া সন্তানদের প্রতি কেমন এক অনিহা প্রকাশ করে। ছেলে ইমনকে দেখলেই ‘বিরক্ত করছ কেন’ বলে ধমকাতো। সুপ্রভা কেঁদেকেটে উঠলেও একসময় তাকে থামাতে চাইতো না সুরাইয়া। পালক হিসেবে সুপ্রভাকে অন্য কোথাও দিয়ে দেওয়ার ভাবনাও আসে তাঁর। ভাবনা আসে এমন,’আমি কাঁদলে তো আমার চোখের জল মুছে দিতে কেউ আসে না। আমি কেন তাদের কান্না থামাতে যাবো?’
যদিও খুব জোড়ালোভাবে লেখক এই মানসিক অবস্থা সুরাইয়ার মধ্যে প্রকাশ করেননি; তবে সূক্ষ্মভাবে বটেই।
• হুমায়ূন আহমেদের ‘অপেক্ষা’ উপন্যাস লেখা
হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কয়েকটি উপন্যাস পড়ে আমার মনে হয়েছিল, কাগজ-করম নিয়ে বসে মাথায় যা এসেছে তিনি লিখে গেছেন। শুধুমাত্র গল্প বলে যাওয়া; বিশেষ বার্তা দিতে নয়। আমিও সেইসব উপন্যাস ভালো লাগা নিয়ে পড়ে গেছি; গুরুগম্ভীর ভাব নিয়ে নয়। তবে ‘অপেক্ষা’র ক্ষেত্রে তা নয়। ২১৯ পৃষ্ঠার উপন্যাস পড়ে আমার একবারও মনে হয়নি যে, লেখক শুধুমাত্র তা খেলাচ্ছলে লিখে গেছেন। বরং বেশ যত্ন সহকারেই তিনি ‘অপেক্ষা’ উপন্যাসটি লিখেছেন। দিয়েছেন বিশেষ কিছু বার্তা। তবে সব যে লেখক ভেঙে ভেঙে পাঠককে বুঝিয়ে দেবেন এমন ধারণা করা অবান্তর।
• ‘অপেক্ষা’ : একটি হতা’শাগ্রস্ত পরিবারের আখ্যান
মানুষ বই কেন পড়ে? অবশ্যই তার সীমাবদ্ধতা দূর করতে; জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে।
এখন পাঠক যদি হতা’শাগ্রস্ত কোনো পরিবারকে না দেখে, না জানে, না চেনে তবে তা পাঠকের-ই সীমাবদ্ধতা।
লেখক গল্পচ্ছলে পাঠককে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই নানান আঙ্গিকে পরিবার, সমাজ, জাতি, ইতিহাসের গল্প তুলে ধরেন।
পাঠক যদি এমন বই পড়ে সেটাকে অর্থ ন’ষ্ট ভেবে নেয়; তবে সেসব পাঠকের এক বৃত্ততেই বন্দি হয়ে থাকা উচিত!